Showing posts with label কৃষি বিষয়ক তথ্য. Show all posts
Showing posts with label কৃষি বিষয়ক তথ্য. Show all posts

Monday, August 15, 2016

ভার্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচো সার বানিজ্যিক উৎপাদনঃ বর্জ্য প্রকৃতপক্ষে অযত্নে ফেলে রাখা সম্পদ। কৃষি-কার্য, পশুপালন প্রভৃতি থেকে প্রচুর পরিমাণে জৈব-বস্তু পাওয়া যায়, যা ঘরেরকোণে পড়ে থেকে পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই জৈব বস্তুকেই আমরা সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে সার তৈরী করে তাতে মূল্য যুক্ত করতে পারি। এর প্রধান লক্ষ্য হল জৈব বর্জ্য মিশিয়ে জমির পুষ্টির জন্য উন্নত মানের জৈব সার তৈরী করা। বিভিন্ন প্রজাতির স্থানীয় কেঁচো ব্যবহার করে মিশ্র জৈব সার প্রস্তুতিঃ সারা পৃথিবীতে প্রায় ২৫০০ প্রজাতির কেঁচো সনাক্ত করা গেছে। বিভিন্ন ধরণের মাটির সাথেই কেঁচোর বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হয় তাই স্থানীয় মাটিতে সেই স্থানের কেচোঁর সাহায্যেই জৈব সার তৈরী একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বাইরে থেকে কেঁচো নিয়ে আসার কোন প্রয়োজন নেই। পেরিওনিক্স এক্সক্যাভ্যাটাস ও ল্যাম্পিটো মৌরিটোই এই দুইধরণের কেঁচোই সাধারনতঃ ব্যবহৃত হয়। এই কেঁচো চাষ করা যায় এবং মিশ্রসার প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয় কিছু সাধারণ পদ্ধতি অবলম্বন করে। বড় গর্ত, ট্যাংক বা কংক্রিটের বৃত্তাকার পাত্র অথবা যে কোন বড় পাত্রে কেঁচোর প্রজনন ঘটিয়ে কেঁচো চাষ করা যায়। কেঁচোর বৈশিষ্ট্য:- কেঁচোর সার তৈরি করতে নির্দিষ্ট প্রজাতির কেঁচো বেছে নেওয়ার জন্য তাদের কিছু বৈশিষ্ট্য দেখে নেওয়া আবশ্যক। যেমনঃ ১) শীত ও গ্রীষ্ম উভয় আবহাওয়াতে বেঁচে থাকার ক্ষমতা। ২) সব রকম জৈব বস্তু থেকে খাবার গ্রহণ করার সামর্থ্য। ৩) কেঁচো যেন রাক্ষুসে প্রকৃতির হয়, অর্থাৎ প্রচুর আহার করার ক্ষমতা থাকতে হবে। ৪) অন্যান্য প্রজাতির কেঁচোর সাথে মিলেমিশে বাস করা। ৫) জৈব দ্রব্য পাওয়ার সাথে সাথে বা অল্প সময়ের মধ্যে সক্রিয় হয়ে ওঠা এবং সেখান থেকে খাবার সংগ্রহ করা। ৬) রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা এবং প্রতিকুল অবস্থানে নিজেদেরকে মানিয়ে নেওয়া। ৭) দ্রুততার সাথে বংশ বিস্তার করা এবং শারীরিক বৃদ্ধি ঘটানো। কিভাবে স্থানীয় কেঁচো সংগ্রহ করা যায়- এমন মাটি সনাক্ত করতে হবে যেখানে কেঁচো দৃশ্যমান। ৫০০ গ্রাম গুড় এবং ৫০০ গ্রাম তাজা গোবর ২ লিটার জলে দ্রবীভূত করে ১মি x ১মি এলাকায় মাটির উপরিতলে ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। খড়ের ডেলা এবং পুরানো চটের থলি দিয়ে জায়গাটা ঢেকে দিতে হবে। ২০ থেকে ৩০ দিন ক্রমাগত জল ছিটিয়ে যেতে হবে। এই জায়গাতেই একসাথে বহু কেঁচোর জন্ম হবে যাদের সহজেই সংগ্রহ এবং ব্যবহার করা যাবে। মিশ্রসার তৈরী করা ও গর্ত বানানো- প্রয়োজনানুযায়ী গর্ত তৈরী করে নেওয়া যেতে পারে বাড়ীর উঠোনে অথবা বাগানে বা মাঠে। একটি অথবা দুটি গর্ত করা যেতে পারে বা ইঁট ও চুন সুরকী দিয়ে যেকোন মাপের ট্যাংক, জল যাওয়ার জায়গা সহ তৈরী করে নেওয়া যেতে পারে। ২মি x ১মি x ০.৭৫মি হচ্ছে এই কাজের জন্য আদর্শ। জৈব ও কৃষি বর্জ্যের উপর নির্ভর করবে গর্তের মাপ। কেঁচোগুলিকে পিঁপড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য গর্তের মাঝ-বরাবর অস্থায়ী প্রাচীরে জল জমিয়ে রাখা যায়। চারটি প্রকোষ্ঠযুক্ত গর্ত/ট্যাংক ব্যবস্থা- সম্পূর্ণ জৈব-সারের প্রকোষ্ঠ থেকে প্রক্রিয়াকরণের পূর্বের বর্জ্য প্রকোষ্ঠে কেঁচোদের যাতায়াতের সুবিধা করার জন্যই চারটি প্রকোষ্ঠযুক্ত গর্ত বা ট্যাঙ্ক তৈরী করা হয়। উপকরণ:- যে সব দ্রব্যকে কেঁচো সারে পরিণত করা যায় তা হলঃ (১) প্রাণীর মল-গোবর, হাঁস-মুরগীর বিষ্ঠা, ছাগল-ভেড়ার মল ইত্যাদি। এগুলির মধ্যে গোবর উৎকৃষ্ট; মুরগীর বিষ্ঠায় প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফেট থাকে যা পরিমাণে বেশি হলে কেঁচোর ক্ষতি হতে পারে। তাই খড়, মাটি বা গোবরের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা ভাল। (২) কৃষিক বর্জ্য-ফসল কাটার পর পড়ে থাকা ফসলের দেহাংশ যেমন-ধান ও গমের খড়, মুগ, কলাই, সরষেও গমের খোসা, তুষ, কান্ড, ভুষি, সব্জির খোসা, লতাপাতা, আখের ছোবড়ে ইত্যাদি। (৩) গোবর গ্যাসের পড়ে থাকা তলানি বা স্লারী ‍(Slurry)। (৪) শহরের আবর্জনা এবং (৫) শিল্পজাত বর্জ্য যেমনঃ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা বর্জ্য। যে সব বস্তু ব্যবহার করা উচিত নয়, তা হলঃ পেঁয়াজের খোসা, শুকনো পাতা, লংকা, মসলা এবং অম্ল সৃষ্টিকারী বর্জ্য যেমনঃ টমেটো, তেঁতুল, লেবু , কাঁচা বা রান্না করা মাছ মাংসের অবশিষ্টাংশ ইত্যাদি। এছাড়া অজৈব পদার্থ যেমনঃ পাথর, ইটের টুকরা, বালি, পলিথিন ইত্যাদি। স্থান নির্বাচন:- সার তৈরী করতে প্রথমে ছায়াযুক্ত উঁচু জায়গা বাছতে হবে, যেখানে সরাসরি সূর্যালোক পড়বে না এবং বাতাস চলাচল করে। উপরে একটি ছাউনি দিতে হবে। মাটির পাত্র, কাঠের বাক্র, সিমেন্টের পাত্র, পাকা চৌবাচ্চা বা মাটির উপরের কেঁচো সার প্রস্তুত করা যায়। লম্বা ও চওড়ায় যাই হোকনা কেন উচ্চতা ১-১.৫ ফুট হতে হবে। পাত্রের তলদেশে ছিদ্র থাকতে হবে যাতে কোনভাবেই পাত্রের মধ্যে জল না জমে। একটি ৫´ ৬" ও ৩´ ২" চৌবাচ্চা তৈরী করে নিতে পারলে ভাল হয়। প্রস্তুত প্রণালী:- প্রথমে চৌবাচ্চা বা পাত্রের তলদেশে ৩ ইঞ্চি বা ৭.৫ সেমি ইঁটের টুকরা, পাথরের কুচি ইত্যাদি দিতে হবে। তার উপরে ১ ইঞ্চি বালির আস্তরণ দেওয়া হয় যাতে পানি জমতে না পারে। বালির উপর গোটা খড় বা সহজে পচবে এরকম জৈব বস্তু বিছিয়ে বিছানার মত তৈরি করতে হয়। এর পর আংশিক পঁচা জৈব দ্রব্য (খাবার) ছায়াতে ছড়িয়ে ঠান্ডা করে বিছানার উপর বিছিয়ে দিতে হবে। খাবারে পানির পরিমাণ কম থাকলে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে যেন ৫০-৬০ শতাংশ পানি থাকে। খাবারের উপরে প্রাপ্ত বয়স্ক কেঁচো গড়ে কেজি প্রতি ১০ টি করে ছেড়ে দিতে হবে। কেঁচোগুলি অল্প কিছুক্ষণ স্থির থাকার পর এক মিনিটের মধ্যেই খাবারের ভেতরে চলে যাবে। এরপর ভেজা চটের বস্তা দিয়ে জৈব দ্রব্য পুরাপুরি ঢেকে দেওয়া উচিত। বস্তার পরিবর্তে নারকেল পাতা ইত্যাদি দিয়েও ঢাকা যেতে পারে। মাঝে মাঝে হালকা পানির ছিটা দিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে অতিরিক্ত পানি যেন না দেওয়া হয়। এভাবে ২ মাস রেখে দেওয়ার পর (কম্পোস্ট) সার তৈরি হয়ে যাবে। জৈব বস্তুর উপরের স্তরে কালচে বাদামী রঙের, চায়ের মত দানা ছড়িয়ে থাকতে দেখলে ধরে নেওয়া হয় সার তৈরি হয়ে গেছে। এই সময়ে কোন রকম দুর্গন্ধ থাকে না। কম্পোস্ট তৈরি করার পাত্রে খাবার দেওয়ার আগে জৈব বস্তু, গোবর, মাটি ও খামারজাত সার (FYM) নির্দিষ্ট অনুপাত (৬ : ৩ : ০.৫ : ০.৫) অর্থাৎ জৈব আবর্জনা ৬ ভাগ, কাঁচা গোবর ৩ ভাগ, মাটি ১/২ ভাগ এবং খামার জাত সার (FYM) ১/২ ভাগ, মিশিয়ে আংশিক পচনের জন্য স্তুপাকারে ১৫-২০ দিন রেখে দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পর ঐ মিশ্রিত পদার্থকে কেঁচোর খাবার হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সাধারণভাবে, একটি ১ মিটার লম্বা, ১ মিটার চওড়া ও ৩ সেমি গভীর আয়তনের গর্তের জন্য ৪০ কিলোগ্রাম খাবারের প্রয়োজন হয়। এরকম একটি গর্তে এক হাজার কেঁচো প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রথম দিকে কম্পোস্ট হতে সময় বেশি লাগে (৬০-৭০ দিন)। পরে মাত্র ৪০ দিনেই সম্পন্ন হয়। কারণ ব্যাক্টেরিয়া ও কেঁচো উভয়েরই সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। তথ্য অনুসারে ১ কেজি বা ১০০০ টি কেঁচো, ৬০-৭০ দিনে ১০ কেজি কাস্ট তৈরি করতে পারে। এক কিলোগ্রাম কেঁচো দিনে খাবার হিসাবে ৫ কিলোগ্রাম সবুজসার (&...

Categories

Catagory

You can replace this text by going to "Layout" and then "Page Elements" section. Edit " About "

Search Here

Recent Posts

Blogger news

Popular Posts