Monday, August 15, 2016

বিতর্কিত রামপালঃ



প্রশ্ন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমানোর লক্ষ্যে এসসিআর (সিলেক্টিভ ক্যাটালিস্ট রিঅ্যাক্টরবা  ধরনের অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কি না?

উত্তর: হ্যাঁরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসরণের হার কমানোর লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারে উন্নত প্রযুক্তি সংযোজনের কারণে রামপাল প্রকল্পে নাইট্রোজেন অক্সাইডের নিঃসরণ অত্যন্ত কম (৫১০ এমজি এনএম৩ মাত্রার মধ্যেহবে। স্টয়কিয়োমেট্রিক এয়ার ফুয়েল  স্বল্পমাত্রার কমবাসশন সীমিত নাইট্রোজেন অক্সাইড তৈরিতে ভূমিকা রাখবে


প্রশ্ন : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি এফজিডি (ফুয়েল গ্যাস ডিসালফারাইজেশনঅথবা সালফার অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?

উত্তর: হ্যাঁরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে এফজিডি সংযোজন এবং সালফার অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। প্রথমতপ্রকল্পটিতে নিম্ন সালফারের কয়লা ব্যবহার করা হবেযা সালফার অক্সাইডকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে।  ছাড়া ফ্লু গ্যাসের  সালফার ডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জাপানি আধুনিক প্রযুক্তি ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হবে। নির্গত গ্যাস থেকে সালফার ডাই অক্সাইড দূর করার জন্য ওয়েট লাইমস্টোনফোর্সড অক্সিডেশন এফজিডি পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। ডাবল ফ্লো কনট্যাক্ট স্ক্রাবার টাইপ এফজিডি ব্যবহার করা হবেযার কার্যকারিতা ৯৬ শতাংশের বেশি।  ছাড়া নির্গত গ্যাস পরিষ্কার রাখার জন্য অত্যন্ত বিশুদ্ধ (৯৫ শতাংশের বেশিচুনাপাথর ব্যবহার করা হবে। 

প্রশ্ন : রামপাল প্রকল্পে পার্টিকুলেট ম্যাটার্সের মাত্রা কমানোর জন্য কি ব্যাগহাউস বা ইএসপি (ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রিসিপিট্যাটরবা অন্য কোনো যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?

উত্তর: হ্যাঁরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে পার্টিকুলেট ম্যাটার্সের মাত্রা কমানোর জন্য ইএসপি ব্যবহার করা হবে।  প্রকল্পের জন্য অনুমোদিত এসএমপির ১৫০ এমজি/এনএম৩ হলেও এর চেয়ে অনেক কমঅর্থাৎ ৫০ এমজি/এনএম৩ মাত্রার নিচে রাখার জন্য অত্যন্ত দক্ষতাসম্পন্ন  পরীক্ষিত প্রযুক্তির ইএসপি ব্যবহার করা হবে

প্রশ্ন : রামপাল প্রকল্পে কি মারকারি রিমুভাল (পারদ দূরীকরণপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে?

উত্তর: হ্যাঁএই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এফজিডির সঙ্গে ওয়েট লাইমস্টোন প্রযুক্তি পারদ দূরীকরণে কাজ করবে। তা ছাড়াস্বাভাবিক নিয়মে কিছু পারদ ছাইয়ের মাধ্যমে শোষিত হবে। বটম অ্যাশ  ফ্লাই অ্যাশ উভয়ই শুকনো অবস্থায় সংগ্রহ করা হবে এবং সেগুলো উপযুক্ত কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে। যার ফলে ভেজা ছাই মজুত করে রাখার দরকার হবে না। 

প্রশ্ন : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি পানি পরিশোধন প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষিত তরল নির্গমন কমানো হবে?

উত্তর: হ্যাঁরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে অত্যাধুনিক পানি পরিশোধন প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষিত তরল নির্গমন কমানো হবে। রামপাল প্রযুক্তিতে পানি পরিশোধনের জন্য আধুনিক  বহুস্তরিক পরিশোধন প্লান্টের ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্প থেকে  যে পানি নির্গত হবেতার বেশির ভাগই কুলিং ওয়াটার রিসারকুলেশন ব্যবস্থার ব্লো ডাউনের পানি।  ছাড়া প্রকল্পের ভেতরের অন্যান্য উৎস থেকে গৃহীত পানি পরিশোধন করা হবে এবং পশুর নদে নির্গত করার আগে সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট মনিটরিং সাম্পের মাধ্যমে পিএইচ ©পর্যবেক্ষণ  পরিশোধন করা হবে। প্রকল্পের বিভিন্ন উৎস থেকে নির্গত পানি পিএইচ  নিরাপদ মাত্রায় নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএফসি গাইডলাইনের অনুমোদিত মাত্রা অনুযায়ীপ্রকল্পের নির্গত পানি নিঃসরণের যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়সেই অনুমোদিত মাত্রা থেকেও প্রকল্পের ব্যবস্থা আরও কঠোর বলা যেতে পারে

প্রশ্ন :  রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি কয়লা থেকে উৎপন্ন ছাই শুকনো অবস্থায় ফেলার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?

উত্তর: হ্যাঁরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা থেকে উৎপন্ন ১০০ শতাংশ বটম  ফ্লাই অ্যাশ উভয়ই শুকনো অবস্থায় সংগ্রহ করার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। সেগুলো উপযুক্ত কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে এই প্রকল্প থেকে ছাই কেনার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উপযুক্ত বিভিন্ন সিমেন্ট কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমাদের প্রকল্পের উৎপাদিত ছাই থেকেও বেশি পরিমাণ ছাই কেনার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা রয়েছে। এরপরও কোনো ব্যতিক্রমী কারণে শতভাগ ছাই কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বিক্রি করা সম্ভব না হলে উন্নত প্রযুক্তি যেমনহাই কনসেনট্রেশন স্লারি ডিসপোজাল (এইচসিএসডিসিস্টেমের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হবে। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য হলোআনুমানিক দুই দিনের মধ্যে অ্যাশ স্লারিকে অ্যাশ স্টোনে পরিণত করে। ফলে নিকটবর্তী জলাধারে ছাই মিশ্রণের সুযোগ নেই


প্রশ্ন : রামপাল প্রকল্পে কি কার্যকর অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে?

উত্তর: হ্যাঁরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে অত্যাধুনিক অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে।  প্রকল্পে ফ্ল গ্যাস টেম্পারেচারনাইট্রাস অক্সাইডসালফার অক্সাইডঅক্সিজেন,  অক্সাইডঅব কার্বন পর্যবেক্ষণের জন্য কন্টিনিউয়াস এমিশন মনিটরিং সিস্টেমের (সিইএমএসব্যবস্থা করা হবে। এর মাধ্যমে প্রকৃত সময়ে সিইএমএস পদ্ধতিতে বয়লারের প্রকৃত চলমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যবেক্ষণ  বিদ্যুৎকেন্দ্রের বায়ু নিঃসরণজনিত তথ্য চিহ্নিত  বিশ্লেষণ করা হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের এলাকার বায়ুর মান পর্যবেক্ষণের জন্য অ্যামবিয়েন্ট এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং সিস্টমের (এএকিউএমএসব্যবস্থা করা হবে

প্রশ্ন :  রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কি পার্শ্ববর্তী সামুদ্রিক প্রাণীর ওপর তাপীয় প্রভাব কমানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?

উত্তর: হ্যাঁরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী সামুদ্রিক প্রাণীর ওপর তাপীয় প্রভাব কমানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।  বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজনে পশুর নদের শুকনো মৌসুমের পানিপ্রবাহের অতি সামান্য পরিমাণ পানি (মাত্র .০৫ শতাংশব্যবহার করা হবে এবং ব্যবহারের পর অবশিষ্ট নগণ্য পানি পরিশোধন করে পশুর নদের পানির তাপমাত্রার সঙ্গে সমন্বয় করে ছাড়া হবে প্রকল্পে ক্লোজড সাইকেল কুলিং ওয়াটার সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ফলে নদীতে নির্গত পানির পরিমাণ হবে অত্যন্ত কম।  ছাড়া নির্গত করার আগে ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টে পানির মান কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবেযার ফলে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএফসির কঠোর নিয়ম অনুযায়ী নির্গত পানির তাপমাত্রা  ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের চেয়ে বেশি হবে না

প্রশ্ন : এই প্রকল্পে কি স্থানীয় প্রতিবেশের ওপর কয়লা আনা-নেওয়া  ব্যবহারের প্রভাব কমানোর ব্যবস্থা করা হবে?

উত্তর: হ্যাঁএটা করা হবে। কয়লা আমদানির বন্দর থেকে সমুদ্রপথে বৃহৎ আকারের জাহাজে সম্পূর্ণ আবৃত অবস্থায় কয়লা পরিবহন করা হবে এবং আবহাওয়া  নদীর গভীরতা বিবেচনা করে উপযুক্ত স্থানে অপেক্ষাকৃত ছোট জাহাজে কয়লা স্থানান্তর করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত নদীপথে বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিবহন করা হবে। এই জাহাজ থেকে কোনো পদার্থ নিঃসৃত হবে নাসালফার অক্সাইড নিয়ন্ত্রিত থাকবেশব্দদূষণ কম হবে।  ছাড়াকয়লা পরিবহনের ক্ষেত্রে সব রকম জাহাজ চলাচলে নির্ধারিত আইএমও কনভেনশন অনুসৃত হবে এবং সম্পূর্ণ আবৃত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হবে

প্রশ্ন ১০: এই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য কি এর পূর্ণাঙ্গ পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করে তার ফলাফল জনগণের সামনে হাজির করা হয়েছে?

উত্তর: হ্যাঁপ্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট-ইআইএকরে তা জনগণের সামনে হাজির করা হয়েছে। ২০১৩ সালের  আগস্ট পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদনে অনুমোদন দেয়যা বিআইএফপিসিএলের ওয়েবসাইট https//bifpcl.com– জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে রাখা আছে। এরপর বিভিন্ন সময়ে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি যেমনমতবিনিময় সভাআলোচনা সভাঅবহিতকরণ সভা ইত্যাদি করা হয়েছে।  ছাড়া কোয়ার্টারলি এনভায়রনমেন্টাল মনিটরিং রিপোর্ট বিআইএফপিসিএলের ওয়েবসাইট https//bifpcl.com– সবার জন্য উন্মুক্ত করে রাখা আছে 
 সংগ্রহীত

To know more click here..http://hajabaralaa.blogspot.com/



0 comments:

Post a Comment

You can replace this text by going to "Layout" and then "Page Elements" section. Edit " About "

Search Here

Recent Posts

Blogger news

Popular Posts

Blog Archive